,

নবীগঞ্জে ১৫ দিনেও কামাল হত্যাকান্ডের আসামীরা এখনও অধরা ॥ এলাকায় ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার আমড়াখাই গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংগঠিত সংঘর্ষে প্রতিপক্ষ নজরুল ইসলাম ও তার লোকজনের হাতে কামাল হোসেন হত্যাকান্ডের ঘটনায় ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামী গ্রেফতার হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। যে কোন সময় খুনিদের গ্রেফতারের দাবীতে রাস্তায় নামার হুমকী দিয়েছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) সকালে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হন কামাল হোসেন। নিহত কামাল একই গ্রামের আব্দুল হেকিমের ছেলে এবং বদরুল মিয়ার চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন। স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার ১নং বড় ভাকৈর ইউপির আমড়াখাই গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে নজরুল ইসলামের সাথে জমি নিয়ে একই গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে বদরুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষে মামলা মোকদ্দমাও রয়েছে। বিগত ৪ঠা আগষ্ট সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা বদরুল স্থানীয় বাজারে যাওয়ার পথে তার মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে নজরুল ইসলাম, তার ছেলে রফিকুল ইসলামসহ একদল লোক যুবলীগ কর্মী বদরুলকে উপর্যপুরি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। এ ঘটনায় বদরুল ইসলাম বাদী হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার ৩ জন আসামী বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জামিনে আসলেও ২ জন বাড়িতে থাকতো। এদিকে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এলাকার শান্তি শৃংখলা রক্ষার্থে উভয় পক্ষকে এলাকার গণ্যমান্য মুরুব্বীসহ থানায় ডেকে আনেন। বদরুল থানায় হাজির হলেও হাজির হননি উক্ত নজরুল। পরে যুবলীগ নেতা বদরুলের জমি উক্ত নজরুল জবর দখলের পায়তারা করলে নবীগঞ্জ থানাকে অবহিত করেন বদরুল। পরবর্তীতে পুলিশের এস.আই অঞ্জন দেব বদরুলের আবেদনের প্রেক্ষিতে উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করে বিরোধীয় জমিতে না যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। নোটিশ প্রাপ্তির দু’দিনের মাথায় শুক্রবার (২৭ আগষ্ট) গভীর রাতে নজরুল তার ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে বদরুলের জমিতে হাল চাষ করে জবর দখল করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ বিষয়টিও থানা পুলিশকে অবগত করেন বদরুলের পরিবার। ৩১ আগষ্ট মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নজরুল ইসলাম তার দলবল নিয়ে বিরোধীয় জমিতে হালি ছাড়া রোপন করতে গেলে বদরুল মিয়া গংরা বাঁধা দেয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাঁধে। উক্ত সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। স্থানীয় লোকজন সংঘর্ষে গুরুতর আহত বদরুল মিয়ার চাচাতো ভাই কামাল হোসেন (৩৮)কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত মামুন মিয়া (৪০ )কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকী আহত যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম (২৮), মোস্তাকিম মিয়া (২৯) ও বদরুল মিয়াকে(২৪) নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নজরুল মিয়ার পক্ষের লোকজন স্থানীয় ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর খবর পাওয়া গেছে। এদিকে এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগসহ এলাকায় বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তারা খুনের ঘটনায় জড়িতদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়ে আসছিলেন। পরে এ ঘটনায় নিহতের মা আয়ফুল বিবি বাদী হয়ে ৫৪ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ ঘটনার মুল হুতা নজরুল ইসলামসহ কোন আসামী গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে নিহতের চাচাতো ভাই যুবলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ঘটনার শুরু থেকে বারং বারং পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। পুলিশের ডাকে স্থানীয় মুরুব্বীয়ান নিয়ে আমরা সাড়া দিলেও নজরুল থানায় আসেনি। জমিতে জোরপুর্বক হাল চাষের ঘটনা জানানোর পর পুলিশ নোটিশ জারি করে। এরপরও নজরুল ইসলাম তার দলবল নিয়ে আমার চাচাতো ভাই এক মা’য়ের এক সন্তান কামাল হোসেনকে খুন করে। অদ্যাবধি পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ঘটনার পর থেকেই আসামীদের গ্রেফতারের পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামীরা গা ঢাকা দেয়ায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না।


     এই বিভাগের আরো খবর